গানের খাতা

আমার গানের স্বরলিপি
'অনীক' ও 'উৎস মানুষ' পত্রিকায় প্রকাশিত এই পুরোনো গণসংগীতগুলোর স্বরলিপি বড় করে পড়ার জন্য স্বরলিপির পাতার উপর মাউস ক্লিক করুন
(এক)

(দুই)
(তিন)
(চার)
(পাঁচ)
(ছয়)
সুন্দরবনে প্রস্তাবিত পরমাণু চুল্লী বিরোধী গণআন্দোলনের গান
(উৎস মানুষ, অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০০২)


"কৃষিজমি বাঁচানোর গান" পড়তে বা ডাউনলোড করতে নীচের লিংকে ক্লিক্‌ করুন

গণসংগীত : 'কৃষিজমি বাঁচানোর গান' (সিঙ্গুর-হরিপুর-নন্দীগ্রাম-লালগড়)



রাজেশ দত্তের লেখা গানের বই

মাটির কাছাকাছি থাকা মানুষের গান


মানবতার গান
'মানবতার গান' ই-বইটি পড়তে নীচের লিঙ্কে ক্লিক্‌ করুন
মানবতার গান- প্রথম পর্ব

মানবতার গান - দ্বিতীয় পর্ব


বইটি সংগ্রহ করতে কলেজ স্ট্রীটের "র‍্যাডিক্যাল ইম্প্রেশনে"র বুক স্টলে খোঁজ করুন।

চলভাষ- ৯৪৩২১১২৯৩৩
অথবা ই-মেল করুন- rajeshdattain@yahoo.com / rajeshdattain@gmail.com

অথবা
 এই ওয়েব-সাইটে মেল করুন - নীচে লিংকে ক্লিক্‌ করুন

আরো কিছু গানের কথাঃ নীচের লিংকে ক্লিক্‌ করুন

মানবতার গান - রাজেশ দত্ত (কিছু মুদ্রিত ও কিছু অপ্রকাশিত)


সাম্প্রতিক কালে লেখা কিছু গণসংগীতের কথা

(এক)
পরিবর্তনের গান
ভোটের বাদ্যি উঠলো বেজে,
পড়ে গেল কাড়াকাড়ি।
কে বা কোন্‌ দল করবে বদল,
কার দল হবে ভারী?
লাল পাহাড়িয়া দেশে জঙ্গলে
ওরা ঘরছাড়া ফেরারী।
রাতের আঁধারে সূর্যসেনারা
আজও অতন্দ্র প্রহরী।

ভোটের খেলায় বুঝে ওঠা দায়
কার কোন্‌ অভিসন্ধি?
গৌর-প্রসূন-ছত্রধরেরা
আজও কারাগারে বন্দি।
রাজা আসে যায়, রং বদলায়
লাল-নীল রকমারি।
লাল পাহাড়িয়া দেশে জঙ্গলে
তাই আজও ওরা ফেরারী।

বিপ্লবীরা প্রজাপতি হয়ে
ঘাসফুলে দেখো উড়ছে।
সিধু-শশধর-উমাকান্তরা
সীসের বুলেটে মরছে।
ডান-বাম মিলেমিশে একাকার,
ভোটের দখলদারি।
লাল পাহাড়িয়া দেশে জঙ্গলে
তাই আজও ওরা ফেরারী।

শশধর ভাসে জলছবি হয়ে
মায়ের চোখের জলে।
বাপের চিতার আগুনে পুড়ছে
লালমোহনের ছেলে।
ছিতামণির চোখের আঁধারে
কে হবে আলোর দিশারী?
লাল পাহাড়িয়া দেশে জঙ্গলে
তাই আজও ওরা ফেরারী।

বেছে নাও সাথী কোন্‌ পথে যাবে?
আমাদের কোন্‌ পক্ষ?
লালবাড়ি? নাকি শহীদের পথে
লালগড় হবে লক্ষ্য?
ভুখা জনতার সংগ্রামী ডাকে
এসো বিদ্রোহ করি।
লাল পাহাড়িয়া দেশে জঙ্গলে
তাই আজও ওরা ফেরারী।

- রাজেশ দত্ত,
  ১৮ মার্চ ২০১১, চন্দননগর।


(দুই)
বিশ্বায়নের গান
লাগলো দেশে বিশ্বায়নের হাওয়া।
গরীবদুখীর হরিমটর,
ধনীর হাতে মেওয়া।

একশো পঁচিশ কোটি টাকার
উপগ্রহ ছাই।
গরিব মানুষ ভুখায় মরে,
পেটের ভাত নাই।
ঋণের জালে দেউলিয়া দেশ,
ভূতের বোঝা বওয়া।
লাগলো দেশে বিশ্বায়নের হাওয়া। 
দ্রব্যমূল্য আকাশছোঁয়া,
চাল-ডাল-তেল সোনা।
আনাজপাতির বাজার আগুন,
অসাধ্য হয় কেনা।
ভোট বাজারে ঝান্ডা নেড়ে
মিছেই দাবিদাওয়া।
লাগলো দেশে বিশ্বায়নের হাওয়া।

দেশের কৃষি ধ্বংস করে
বিলিতি বীজ-সার।
দেনার দায়ে গাঁয়ে-গাঁয়ে
চাষির হাহাকার।
সোনার ফসল ফলাতে চেয়ে
বিষের জ্বালা পাওয়া।
লাগলো দেশে বিশ্বায়নের হাওয়া।

বাড়ছে বেকার, ছাঁটাই, লে-অফ,
কারখানাতে তালা।
মুক্ত বাজার অর্থনীতির
চৌষট্টি কলা।
উদার অর্থনীতির সুরে
পুঁজির গুণ গাওয়া।
লাগলো দেশে বিশ্বায়নের হাওয়া।

সত্তর হাজার কোটি টাকার
কালমাদির খেলা।
টু-জি টেলিকম হরেকরকম
দুর্নীতির মেলা।
তবু দেশের মাথা মন্ত্রী-নেতা
তুলসীপাতা ধোওয়া।
লাগলো দেশে বিশ্বায়নের হাওয়া।

মজুর কাঁদে সেজ-এর ফাঁদে,
পুঁজিপতির হাসি।
ভিটেমাটি হারিয়ে বেঘর
গরীব আদিবাসী।
কর্পোরেটের ভেট চড়াতে
জমির দখল নেওয়া।
লাগলো দেশে বিশ্বায়নের হাওয়া।

উন্নয়নের ভাঁড়ার শূন্য,
অস্ত্র আমদানি।
শিক্ষা-স্বাস্থ্যে কানাকড়ি,
যুদ্ধে বারো আনি।
হাসপাতালের বেহাল দশা
যমযাতনা সওয়া।
লাগলো দেশে বিশ্বায়নের হাওয়া।

পাঁচশো কোটির প্রাসাদ গড়ে
মুকেশ আম্বানি।
মাও-দমনে ছশো কোটির
ফৌজি কোম্পানি।
গ্রীন হান্টের নামে পুঁজির
লুটেপুটে খাওয়া।
লাগলো দেশে বিশ্বায়নের হাওয়া।
- রাজেশ দত্ত,
  ২৪ জানুয়ারি ২০১১,
  চন্দননগর।


(তিন)
গণসংগ্রামের গান
আর গান নয়, স্লোগান তোলো।
শান্তি মিছিল অনেক হোলো,
এবার ক্রোধের আগুন জ্বালো,
লড়াইয়ের দাও ডাক।

অনেক কান্না, রক্ত ঝরেছে।
কত আশা, কত স্বপ্ন মরেছে।
দাসত্ব বেড়ি দুপায়ে পড়েছে।
শৃঙ্খল ঘুচে যাক।

খেটে খায় যারা কারখানা-কলে,
চাষের জমিতে, জলে-জঙ্গলে,
লড়াকু কিষাণ-মজুরের দলে
প্রতিবাদ ভাষা পাক।

ভাঙো নীরবতা, ভীরুর জড়তা।
দিকে দিকে জাগে ক্ষুব্ধ জনতা।
লক্ষ কণ্ঠে মুক্তি বারতা ---
থেকো নাকো নির্বাক।

দিগন্তে আজ ঝড়ের আভাস,
রক্ত আখরে লেখে ইতিহাস।
ক্ষোভের আগুনে শ্বেত সন্ত্রাস,
জ্বলেপুড়ে হোক খাক।

পথে নামো সাথী, দূর করে ভয়।
হবে মেহনতী মানুষের জয়।
দিনবদলের দৃঢ় প্রত্যয়
বুকের গভীরে থাক।

- রাজেশ দত্ত,
  ১৯ জানুয়ারি ২০১১, চন্দননগর।


(চার)
রাজারহাটের গান
রাজারহাটে ভাঙলো রাজার
উন্নয়নের হাঁড়ি।
সিঙ্গুরেতে উল্টে গেলো
টাটার ন্যানো গাড়ি।

কৃষকের ভিটেমাটি
কেড়েকুড়ে মেগাসিটি।
গরিব মেরে, গায়ের জোরে
জমির দখলদারি।

শিল্পায়নের ফাটলো ফানুস,
তবুও রাজার নেই কোনও হুঁশ।
ক্যাডার-পুলিশ মারছে মানুষ,
ভয়ের শাসন জারি।

পুঁজির ভজন, পুঁজির পূজন
মজুর শোষণ, মালিক তোষণ।
ভোটের সময় মিথ্যে ভাষণ,
মুখোশ রংবাহারি।

লাল বানরের চলছে হামলা,
জ্বালায় পোড়ায় সোনার বাংলা।
লেজের আগুন এবার সামলা,
পুড়লো যে মুখ তোরই।

- রাজেশ দত্ত,
  ১৬ জানুয়ারি ২০১0,
  চন্দননগর।


(পাঁচ)

নেতাইগ্রামের গণহত্যার প্রতিবাদে
(প্রচলিত লালনগীতি চিরদিন কাঁচা বাঁশের খাঁচার সুরে)
চিরদিন রাজা, তোমার শাসন রইবে না।
যতই মারো, হামলা করো
মুখ বুজে আর কেউ সইবে না।

গ্রামবাংলা শ্মশান করে
ভাবছো গদি রাখবে ধরে।
ছাড়লে দাঁড়ি ডুববে তরী,
পালের হাওয়া আর বইবে না।

রাজার পোষা সেপাই-সেনা,
গাঁ-গেরামে দিচ্ছে হানা।
অত্যাচারে মানুষ মরে,
বিষাক্ত সাপ তুলছে ফণা।

রক্তে ভাসে কংসাবতী।
ফুলকুমারী, সরস্বতী
গুলির মুখে দাঁড়িয়ে রুখে
লালগড়ে প্রাণ দেয় নয় জনা।

রাজা, তোমার দিন ফুরালো,
সাধের আসন টলোমলো।
ঘাতক রাজা, মিলবে সাজা
পাপের বোঝা কেউ বইবে না।

বিদ্বজ্জনের শান্তি মিছিল।
আমরা-ওরা ভেদের পাঁচিল।
ভোটের কোঁদল, এদল ওদল --
রঙের বদল দিন বদলায় না।

জাগো মজুর, জাগো কিষাণ,
মরা গাঙে এসেছে বান।
ক্রোধের আগুন জ্বলুক দ্বিগুন
মুছে ফেলে শোক-যাতনা।
- রাজেশ দত্ত,
  ৮ জানুয়ারি, ২০১১, চন্দননগর।

(ছয়)
বন্দিমুক্তির গান
বন্দিশালার শেকলে পড়েছে টান।
ভাঙবে কপাট, ছিঁড়বে বাঁধন
নজরুলেরই গান।

ছত্তিশগড় থেকে লালগড়
বন্দিমুক্তি দাবিতে মুখর।
হাতে হাত রেখে প্রতিরোধ গড়,
মরা গাঙে তোল্‌ বান।
লুঠ হয়ে যায় স্বদেশভূমি,
জল - জঙ্গল - চাষের জমি।
সরকার করে পুঁজির গোলামি,
গরিবের যায় জান।
বন্দিশালার শেকলে পড়েছে টান।

চিদাম্বরম - রমন - বুদ্ধ
দেশজুড়ে জারি করেছে যুদ্ধ।
প্রতিবাদী স্বর কারায় রুদ্ধ,
শাসকের ফরমান।
রাজার বানানো আইনের ফাঁদে
ছত্রধরেরা বিনা অপরাধে
বন্দি আছেন লোহার গারদে,
বিনায়ক সাজা পান।
বন্দিশালার শেকলে পড়েছে টান।

রাষ্ট্রের পোষা খুনী জল্লাদ
ফৌজি সেনা, পুলিশ-হার্মাদ।
খুন হয় লালমোহন, আজাদ
কত শত তাজা প্রাণ।
যৌথবাহিনীর আদিম উল্লাস,
খুন-ধর্ষণ-লুঠ-সন্ত্রাস।
গ্রামে গ্রামে ভুখা মানুষের লাশ ---
গ্রীন হান্ট অভিযান।
বন্দিশালার শেকলে পড়েছে টান।

বিচারের বাণী কাঁদে না নিভৃতে।
আইন-কানুন ঘাতকের হাতে।
শোষণের বেড়ি ভাঙ প্রতিঘাতে,
শাসকেরা সাবধান।
জাগো বিদ্রোহে মজুর-কিষাণ,
হাতে তুলে নাও মুক্তি নিশান।
উঠুক তুফান, বাজাও বিষাণ ---
যুদ্ধের আহ্বান।
বন্দিশালার শেকলে পড়েছে টান।

- রাজেশ দত্ত,
  ৪ জানুয়ারি ২০১১, চন্দননগর।

(সাত)
অপারেশন গ্রীনহান্ট
শাল-মহুলের জঙ্গলে
বাঘ দিয়েছে হানা।
সোঁদরবনের বাঘ নয়,
উর্দিপরা সেনা।
বাঘের চেয়েও হিংস্র ওরা,
মানুষখেকো দানো।
সঙ্গে আছে হায়নার দল
পুলিশ শয়তানও।
ওদের দোসর রক্তচোষা
হার্মাদের জাত।
আদিবাসীর গরম খুনে
শীতের মৌতাত।
কোবরা সাপের ফোঁসফোঁসানি,
বিষাক্ত ছোবল।
জমি-জঙ্গল ছিনিয়ে নিতে
জুটেছে দলবল।
খুন - ধর্ষণ - লুঠতরাজ
আগুন জ্বলছে গ্রামে।
সরকারের শিকার পরব
গ্রীনহান্টের নামে।
গাঁয়ের ইশ্‌কুল দখল করে
হার্মাদদের ঘাঁটি।
মজুত আছে অস্ত্র ভাঁড়ার
বোমা-বন্দুক-লাঠি।
নির্বিচারে ঝাঁপিয়ে পড়ে
চালায় সন্ত্রাস।
রক্তে রাঙে রাঙামাটি,
ধুলোয় পড়ে লাশ।
পায় না রেহাই কোলের শিশু,
অন্ধ-আতুর-বৃদ্ধ।
ভুখা মানুষের সঙ্গে চলে
ঘাতক সেনার যুদ্ধ।
লুঠ করে নেয় ধানের গোলা,
গেরস্ত বসত।
কলির দুঃশাসন লোটে
নারীর ইজ্জত।
জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যায়
গ্রামের ঘরবাড়ি।
পুঁজিপতির ভেট চড়াতে
জমি দখলদারি।
খুনের হোলিখেলায় মাতে
পুলিশ-মিলিটারি।
প্রতিবাদের কণ্ঠ রোধে
কালাকানুন জারি।
সিপাই-সেনার সাতখুন মাফ
আজব দেশের আইন!
দেশদ্রোহের জিগির ওঠে
ফাটলে ল্যান্ডমাইন।
মাও-জুজুর ভয় দেখিয়ে
চিরুনি তল্লাশি।
ভিটেমাটি হারিয়ে বেঘর
গরিব আদিবাসী।
রাতবিরেতে ঘরে ঘরে
ধরপাকড় হামলা।
বিনা দোষে জেলে পুরে
সাজায় ঝুটা মামলা।
টাটা-জিন্দাল-মন্ত্রী-নেতার
ফৌজি নিরাপত্তা।
জনগণের টাকায় চলে
আদিম গণহত্যা।
- রাজেশ দত্ত,
  ২৬ ডিসেম্বর ২০১০, চন্দননগর।



কোনও গণসংগীত সংস্থা বা শিল্পী এই গানগুলি বা রাজেশ দত্তের অন্যান্য গানের সুর ও স্বরলিপি পেতে আগ্রহী হলে নীচের দূরভাষে যোগাযোগ করতে পারেন
মোবাইল- ৯৪৩৩৫ ৬৬৩০২, দূরভাষ- ০৩৩-২৬৮৩ ৪৩৫৭

ফেসবুক-এ রাজেশ দত্তের গানের পাতা 'মানবতার গান' - এখানে ক্লিক্‌ করুন।

ফেসবুকে রাজেশ দত্তের সাথে যোগাযোগের জন্য এখানে ক্লিক করুন।

"বুকের আগুন বাংলা মায়ের", দুষ্ট কবির লেখা গানের ভিডিও দেখুন- শিল্পী- সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়

বাংলা জ্বলছে-র গানগুলির ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন এই সিডির ছবিতে লেখা গানের উপর ক্লিক্ করলেই সেই গানটি (অডিও) ডাউন লোড করতে পারবেন।

বাংলা গণসংগীতের প্রবাদপ্রতিম শিল্পী সুরেশ বিশ্বাসের ওয়েবসাইটে যেতে এখানে ক্লিক্‌ করুন।



বাংলা ভাষায় বৃহত্তম ও সমৃদ্ধ সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ওয়েবসাইট "মিলনসাগর" দেখতে এখানে ক্লিক্‌ করুন।